Prantik.farm একটি ব্যতিক্রমধর্মী কৃষিপণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ ৫ বছরেরও বেশী সময় ধরে নানামুখী পরীক্ষানিরীক্ষার পর prantik.farm দেশীয় পদ্ধতিতে সরিষা সহ তিশি, বাদাম, কালোজিরা ও অন্যান্য দেশী তেলবীজ থেকে তেল উতপাদন শুরু করেছে। কুরিগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নে প্রান্তিকের খামারবাড়ি অবস্থিত। কৃষিপণ্য উৎপাদনের কাজটা মূলত সেখানেই করা হয়।
দেশ বিদেশের নানা গবেষণায় দেখা গেছে সরিষাসহ অন্যান্য তেলবীজে তেল উৎপাদনের একমাত্র স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি হচ্ছে “উড প্রেসড কোল্ড প্রেসড” পদ্ধতি। সহজ বাংলায় বলতে গেলে তেল উৎপাদনের পুরো প্রক্রিয়াটি হতে হবে কাঠের প্রেশার ও শীতল চাপ পদ্ধতিতে। এবার প্রশ্ন আসতে পারে কাঠের প্রেশার নাহয় বুঝলাম কিন্তু শীতল চাপ পদ্ধতি আবার কি?
শীতল চাপ পদ্ধতি বুঝতে হলে আপনাকে দুই হাতের তালু একসাথে করে কিছু সেকেন্ড জোরে জোরে ঘষতে হবে। দেখবেন দুই তালুর পৃষ্ট ঘর্ষণের ফলে তাপ উৎপাদন হচ্ছে। এবার ধীরে ধীরে ঘষুন, দেখবেন আগের মত আর তাপ উৎপাদন হচ্ছে না। এটাই হচ্ছে শীতল চাপ পদ্ধতি, আর শীতল চাপ তথা কোল্ড প্রেসড পদ্ধতি হচ্ছে দেশীয় তেল উৎপাদনের একমাত্র বিজ্ঞানসম্মত উপায়।
এবার আমরা স্মরণ করতে পারি আমাদের দেশীয় পদ্ধতি নিয়ে। আমরা যারা গ্রামে আজ থেকে দশ বছর আগেও বেড়ে উঠেছি, আমরা দেখতাম গ্রামের মানুষ মূলত সরিষার তেল দিয়েই রান্না করত। সরিষার তেলই আমাদের আদিম খাদ্যাভাসের অংশ। এরপর বাজারে এল সয়াবিন তেল। তখনও সয়াবিন তেলকে বি গ্রেড ভোজ্য তেল হিসেবে বিবেচনা করা হত। আমার মরহুম দাদুকে দেখেছি হোটেলের পরোটা সয়াবিন তেলে ভাজা বলে তিনি হোটেলে পরোটা খেতেন না। গ্রামের বৃদ্ধরা এখনো দাবী করেন, সরিষার তেল খেতেন বলেই তারা সুস্থ জীবন কাটাতেন।
সেসব সোনালী দিন আর নেই। খাদ্যের রাজনীতিতে হারিয়ে গেছে দেশীয় তেলের ব্যবহার। পরিবর্তে জায়গা করে নিয়েছে মানহীন নিচু গ্রেডের সয়াবিন তেল।
হাড়িয়ে যাওয়া প্রাচীন তথা সঠিক খাদ্যাভাসকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে প্রান্তিক। তার-ই অংশ হিসেবে কাঠের ঘানিতে উড প্রেসড – কোল্ড প্রেসড পদ্ধতিতে সরিষাসহ দেশীয় তেল উৎপাদন করে যাচ্ছে প্রান্তিক।